ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অনেকটা বিপর্যয়ের মধ্যে দেশের পুলিশি ব্যবস্থা। এক মাস পার হলেও পুলিশি ব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি। বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মনোযোগ বা কার্যক্রম মূলত বদলি, পদোন্নতি ও পদায়ন ঘিরে। এই ক্ষেত্রে পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সাত-আটজন কর্মকর্তার একটি গ্রুপ অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই গ্রুপ বিগত সময়ে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের তালিকা করছে। কে কোন থানার ওসি হবেন, কে কোন জেলার পুলিশ সুপার হবেন; রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে কারা যাবেন—সেটা ঠিক করছে এই গ্রুপ। এই ক্ষেত্রে পেশাদারত্ব কম গুরুত্ব পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় বিবেচনায় পদোন্নতি পেয়েছেন, ঢাকায় চাকরি করছেন—এমন কর্মকর্তারাও ‘বঞ্চিত’ দাবি করছেন। আবার বিগত সরকারের সময়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে শাস্তি পেয়েছেন এমন কর্মকর্তারাও একই দাবি করে সুবিধা নিচ্ছেন। এমন ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও উঠেছে।
আওয়ামী লীগ আমলে খুন, গুমে জড়িত এবং দলবাজদের বাদ দিয়ে পুলিশ পুনর্গঠনের জন্য পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম
একপর্যায়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘুষ লেনদেন না করার অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয় পুলিশ সদর দপ্তর। ৩১ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, একটি চক্র পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ইউনিটে বদলির ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ধরনের প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার আগেই ৬ আগস্ট রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ময়নুল ইসলামকে। এর পর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশে বদলি-পদোন্নতি নিয়ে অন্তত ২২টি আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে চার শতাধিক বদলি ও পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে অন্তত ১৩ জনকে। চাকরি ফিরে পেয়েছেন পাঁচজন। এ ছাড়া ডিএমপি সদর দপ্তর আলাদা করে কয়েক হাজার পুলিশ সদস্যকে পদায়ন করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই গ্রুপ বিগত সময়ে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের তালিকা করছে। কে কোন থানার ওসি হবেন, কে কোন জেলার পুলিশ সুপার হবেন; রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে কারা যাবেন—সেটা ঠিক করছে এই গ্রুপ
অতীতে নানা অপরাধ বা অপেশাদার কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন এবং শেখ হাসিনা সরকারের সময়েও ‘বঞ্চিত’ ছিলেন; এমন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ এখন প্রভাবশালী হয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন অনেকে। একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মাঠপর্যায়ে পুলিশি কার্যক্রমকে পুরোপুরি চালু করার কার্যক্রমের চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বেশি ব্যস্ত পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ে। এখন পর্যন্ত যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, তাতে অনেক পেশাদার কর্মকর্তা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন; এর মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বঞ্চনার শিকার কর্মকর্তাও রয়েছেন।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদোন্নতি-বদলি ঘিরে পুলিশে নতুন যে প্রভাবশালী গ্রুপ সক্রিয়, তাদের মধ্যে অন্যতম বিসিএস ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমেদ। তাঁর বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রামে। তিনি সর্বশেষ রাজশাহীর সারদা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে পুলিশ সুপার হিসেবে ছিলেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৮ বছর তাঁর কোনো পদোন্নতি হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ সুপার থেকে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপর গত ২২ আগস্ট তাঁকে ডিএমপিতে পদায়ন করা হয়।
বদলি-পদোন্নতির তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ২৫ ব্যাচের একজন নারী কর্মকর্তাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন। তাঁর স্বামী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে খুলনা অঞ্চলের একটি আসনে দলটির প্রার্থী ছিলেন। বদলি ও পদোন্নতির জন্য অনেক এই দম্পতির কাছে ধরনা দেন বলে জানা গেছে।
বদলি-পদোন্নতির তালিকা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে ওই রাজনীতিক ও ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের ভূমিকা বেশি। আইজিপিও এঁদের বেশি গুরুত্ব দেন বলে পুলিশের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার আছে।
বদলি-পদোন্নতিতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগটি সত্য নয়। যাঁরা এত দিন বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরাই পদোন্নতি ও পদায়ন পাচ্ছেন। তাঁর দাবি, থানা–পুলিশকে সক্রিয় করতে তাঁরা কাজ করছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমেদ
পুলিশের বদলি-পদোন্নতির তালিকায় কেবল ‘বঞ্চিতরাই’ আসছেন না; ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ এবং নানা তদবিরেও নাম ঢুকছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বদলি-পদোন্নতিতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগটি সত্য নয়। যাঁরা এত দিন বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরাই পদোন্নতি ও পদায়ন পাচ্ছেন। তাঁর দাবি, থানা–পুলিশকে সক্রিয় করতে তাঁরা কাজ করছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ডিআইজি পদোন্নতিপ্রাপ্ত মো. সরওয়ারও কিছু ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে এসবিতে থাকা কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে। সাবেক এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলামের ব্যাচের হলেও সরওয়ারের নিয়মিত পদোন্নতি হয়নি। তবে এসবিতে মনিরুলের বন্ধু হিসেবে তিনি গত আমলে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম কয়েক দিন সরওয়ারই ছিলেন এসবির সবকিছু। এই সময়ে এসবিপ্রধানের কক্ষ থেকে ২৫ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
ডিএমপির মধ্যে পদায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তা উপকমিশনার তাহেরুল হক চৌহান। তিনি দীর্ঘদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পিবিআইতে ছিলেন। যদিও তাঁর ব্যাচের অনেকেই শেখ হাসিনা সরকারের সময় অতিরিক্ত ডিআইজি হয়ে গেছেন।
অবশ্য তাহেরুল হক চৌহান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘ডিএমপিতে বদলি-পদোন্নতি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হচ্ছে। যে অভিযোগের কথা বলছেন, তার সঙ্গে আমার দূরতম সম্পর্ক নেই। অনেকে হয়তো ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব বলছেন।’
এ ছাড়া ১৫তম বিসিএসের ডিআইজি আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ ও ১৭তম বিসিএসের ডিআইজি আতাউল কিবরিয়া পুলিশ সদর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ পদায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে। সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন আলোচিত হচ্ছেন সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও সাবেক ওসি মাহবুব।
পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, পুলিশ সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু বদলি ও পদোন্নতি ঘিরে গত এক মাসে যেসব আদেশ হয়েছে এবং এখনো যে তোড়জোড় চলছে, তাতে কেবল দলীয় ও বঞ্চিত বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা মহানগর পুলিশসহ (ডিএমপি) বিভিন্ন ইউনিটের ২০ জন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পুলিশ বাহিনী পুনর্গঠনের দাবি ওঠে। পুলিশকে রাজনীতিমুক্ত করাসহ ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু এ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা। যদিও পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে এনে বাহিনীকে পুরোদমে কাজে লাগানো এখন অত্যন্ত জরুরি কাজ। পুলিশের যেসব স্থাপনায় হামলা হয়েছে, শীর্ষ কর্মকর্তাদের সেসব স্থাপনা পরিদর্শন করা, জেলায় জেলায় গিয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সাহস দেওয়া, গণহারে শাস্তি না দিয়ে অতীতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পেশাদার কর্মকর্তাদের বসানো জরুরি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না।
অবশ্য গত বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা এসেছে। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসনসচিব সফর রাজ হোসেনকে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, পুলিশ সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু বদলি ও পদোন্নতি ঘিরে গত এক মাসে যেসব আদেশ হয়েছে এবং এখনো যে তোড়জোড় চলছে, তাতে কেবল দলীয় ও বঞ্চিত বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন, এমন কর্মকর্তাও বঞ্চিত কোটায় এখন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যথাসময়ে পদোন্নতি পেয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে চাকরি করেছেন, সরকার পতনের পর এখন ছাত্রদলের নেতা দাবি করে অনেকে জেলা পুলিশের প্রধান হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, সিরাজগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, কিশোরগঞ্জ ও ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ সুপার অন্যতম।
২৪তম ব্যাচের এক কর্মকর্তাকে সম্প্রতি ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার পদে পদায়ন করা হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পান। ২০১৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) গোয়েন্দা শাখার উপকমিশনার ছিলেন। এ ছাড়া পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি। এখন ডিএমপিতে পদায়ন হয়েছে তাঁর।
সরকার পতনের পর পুলিশ সদর দপ্তরে এসে একজন ডিআইজিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন। গুরুতর অভিযোগের কারণে তাঁকে বদলি করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের এক নেতার সুপারিশে তাঁকে আবার নোয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার করা হয়। অপেশাদার আচরণের কারণে তৎকালীন পুলিশ সুপারের অনুরোধে ওই কর্মকর্তাকে লালমনিরহাট ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়। এখন তিনি নিজেকে সাবেক ছাত্রদল নেতা দাবি করেন। এরই মধ্যে ডিএমপিতে গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) পদায়ন পেয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তর ও সাতটি রেঞ্জে যাঁদের ডিআইজি হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে পাঁচজন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়মিত পদোন্নতি পেয়েছেন। গত সরকারের সময়ে পুলিশের ভালো পদগুলোতে কর্মরত ছিলেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও বিভিন্ন ইউনিটে পদায়ন সরকারি বিধিবিধান মেনে যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে।
সরকার পতনের পর পুলিশ সদর দপ্তরে এসে একজন ডিআইজিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন। গুরুতর অভিযোগের কারণে তাঁকে বদলি করা হয়।
তবে কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদের বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, সরকার পতনের পর পুলিশে মূলত বিসিএস কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হচ্ছে। কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদে পদোন্নতির কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও এই ক্ষেত্রে বৈষম্য ছিল; যা এখনো রয়ে গেছে।
সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশ বাহিনী চলেছে দলবাজি ও সিন্ডিকেট করে। আওয়ামী লীগ আমলে খুন, গুমে জড়িত এবং দলবাজদের বাদ দিয়ে পুলিশ পুনর্গঠনের জন্য পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে বদলি-পদোন্নতিতে যদি কোনো ঘুষ লেনদেন হয়ে থাকে, সেটা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।