গত জুন মাসের শেষের দিকে হাইকোর্টের নতুন রায়ের প্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা, পরবর্তীতে নাম দেয়া হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে এই আন্দোলন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পতনের কারণ হয়।
অতিরিক্ত জেদ, অহংকার, আর চারিত্রিক অধঃপতনের কারণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে পতন হয় স্বৈরাচারী সরকারের। আন্দোলনের শেষ দিকে ছাত্রদের পাশাপাশি রাস্তায় নেমে আসে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা, সাথে সাথে যে সমস্ত ছাত্রদের অন্যায় ভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাদের অভিভাবকগণও মাঠে নেমে আসেন বলে মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে। তবে যখন এক দফা আন্দোলনের ডাক দেয়া হয় তখন বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠান কওমি মাদ্রাসা সমূহের ছাত্র শিক্ষকরাও মানবতার খাতিরে এ আন্দোলনে যোগদান করেন, ইতিমধ্যে এ আন্দোলনে নিহতদের মধ্য থেকে কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের নিহতদের একটি লিস্ট প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
তারা ঢাকা এবং ঢাকার বাহিরের বিভিন্ন মাদ্রাসা এবং মসজিদে কর্মরত ছিলেন। কেউ ছিলেন ছাত্র বা শিক্ষক। স্বৈরাচারী শাসকের পতনের জন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যান্য কর্মীদের সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই যোগ দিয়েছিলেন মাদ্রাসার ছাত্ররাও। কিন্তু আজকে মাদ্রাসার ছাত্রদের অবদান কে স্মরণ করা হচ্ছে না।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে দেয়ালে ইসলামি ক্যালোগ্রাফিসহ বিভিন্ন ইসলামী ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ লিখনী শোভা পেয়েছিল, কিন্তু ঘাপটি মেরে থাকা অনৈসলামিক চিন্তা চেতনার কিছু লোক সেগুলো মুছে দিয়ে সেখানে নিজেদের চেতনার স্বাক্ষর এটে দেয়। এতে একদিক দিয়ে যেরকম মাদ্রাসার ছাত্রদের নিচু ও ছোট মনে করা হয়েছে, তেমনিভাবে অস্বীকার করা হয়েছে হাজার বছরের মুসলমানদের ঐতিহাসিক ঐতিহ্য অবদান।
দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় এগুলো নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এগুলো নিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে সমালোচনা করতে দেখা গেছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা মনে করেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে যেরকম মেধা এবং কোটার ভিত্তিতে কোন বৈষম্য ছিল না তেমনিভাবে ছাত্র এবং ওস্তাদ হিসেবে কওমি মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটির কার্যক্রমের মধ্যে কোন বৈষম্য থাকা উচিত নয়।